আজ ইদের দ্বিতীয় দিন, বাসায় মেহমান , গৃহকর্ত্রীও মেহমান সামলাতে ব্যস্ত, এমন সময়ে আমি একা শহরের বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি গ্রামের বাড়ির পথে একটুখানি ভিন্ন পরিবেশে অন্য রকম আনন্দের খোঁজে । বৈশাখী হাওয়া মেঘলা বাতাস আর ঝড়বৃষ্টির শঙ্কা এ নিয়ে বাসে ওঠে সিটে বসে আছি , বাসটি চলছে মিনিট পঞ্চাশের মধ্যেই আমার গ্রমের বাড়ি বড়বাড়িতে এসে বাসটি থেমে গেলো, বাস থেকে নেমে পছন্দের ছোট ভাই আতাকে ডাকলাম সে মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়াল, একে একে পারভেজ , হামিদ , বিপুলসহ বেশ কয়েকজন জড়ো হলো, তারপর চায়ের দোকানে চা পান ও খোশগল্পে সময়টা বেশ মজার মধ্যেই কেটে গেলো। কাজের চাপে বহুদিন এমন আড্ডা দেওয়া হয়নি , তাই একটু উদাসী মনে গ্রামীণ জনপদে আড্ডাটা বেশ ভালোই লাগলো । তারপর মুক্ত আকাশ, মুক্ত বিহঙ্গে, খোলা প্রকৃতি দেখার জন্যে বেড়িয়ে যাই সীমাহীন দিগন্তের পথে বিস্তৃত ধানক্ষেত , সুপারি বাগান, ভুট্টাক্ষেত , গাছগাছালির সমারোহ আর দৃষ্টিনন্দন গুচ্ছ গুচ্ছ গ্রাম অনেক দিন পর আমার মনে বেশ আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে । পাশের গ্রামে শেফালী বৌদির উঠানে গিয়ে দেখি বাড়িতে জমকালো আয়োজনে চলছে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি, বিয়ের দাওয়াত অবশ্য পেয়েছিলাম বটে, কিন্তু মুল পর্ব হবে আগামীকাল , আজ ছিলো হলুদের অনুষ্ঠান । বৌদির মেয়ে আমার ছাত্রী ছিলো , তাই আজকে আশীর্বাদ করে দিয়ে দই চিড়া খই মুড়ি খেয়ে বিদায় নিলাম। এভাবে দিনটা কেটে গেলো অবেলায় অবসরে, শুধু তাই নয়, হঠাৎই দৃষ্টি ফিরে গেলো ছোটোবেলার সেই স্কুল পালিয়ে বাড়ি থেকে সাত, আট কিলোমিটার দূরে হিন্দুদের পুণ্যের স্থান সিন্দুর মতি বান্নি বা মেলার কথা আর সেই সুবাদে বিরাট পুকুুরটি আজ আর একবার দেখার আগ্রহ জাগলো ।
তাই সেখানে ছুটে গেলাম সন্ধ্যার আগে, বেশ মজা করলাম , ফটোসেশান হলো, বিশাল বটগাছের ছায়াতলে কিছু আনন্দ ভাগাভাগি করলাম আবারো বাসে ওঠে বংপুরে নিজের নীড়ে এসে উপস্থিত হলাম এটাই তো জীবন, তাই জীবনের পথে চলাই জীবন , অন্তবিহীন পথে চলাই জীবন । ধন্যবাদ আপন মন ও বন্ধু আমার ।
Leave a Reply