বান্দরবানের লামায় প্রধান শিক্ষকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন।
শফিউজ্জামান আতা,
স্টাফ রিপোর্টার।
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলাধীন হারগাজা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিনের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে উক্ত বিদ্যালয়ের “প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের” পক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অদ্য ৬ই মার্চ রোজ সোমবার অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধনে মোঃ আলম শাহের সঞ্চালনায় ‘হারগাজা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের’ পক্ষে বক্তব্য রাখেন মোঃ সৈয়দ হোসেন, মোঃ শহীদ সহ অন্যান্য বক্তারা।
উক্ত মানববন্ধনে শিক্ষক ও অভিভাবকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মোঃ আলী, মোঃ আমিরুল আজম, সুরজিৎ পাল, জারি আক্তার মুন্নি ও কৃষিবিদ মৃনাল কান্তি রায় সরকার।
মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে সহমর্মিতা জানিয়েছেন মোঃ জয়নাল আবেদীন, নুর আয়েশা, মোঃ হুমায়ুন কবির, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, মংথুই মার্মা, মোঃ ওবাইদুর রহমান, মোঃ মনজুর, রহিমা বেগমসহ অন্যান্য ব্যাক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য যে, গত ৩রা মার্চ ২০২৩ রোজ শুক্রবার জেলা প্রশাসকের ট্যালেন্ট হান্ট-২০২৩ এর শিক্ষার্থী যাচাইয়ের কাজে প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন বিদ্যালয়ে আসেন। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের পাগলীর আগাস্থ মঞ্জুরের বাগানের পাশের রাস্তার উপর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে গালিগালাজ করে ও হামলা চালায়।
এর পরবর্তীতে মোঃ রুহুল আমিন নিজ বাড়ির কাছে ডুলাহাজারা বাজারে পৌঁছালে সেখানে অভিযুক্তরা সম্মিলিতভাবে দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
পরেরদিন শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরও ৫-৬ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন।অভিযুক্তরা হলেন হারগাজা গ্রামের বাসিন্দা মৃত কবির আহমদের ছেলে নুরুল ইসলাম প্রকাশ কালা সোনা (৩৫), চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা ইউনিয়নের বৈরাগিরখিল গ্রামের বাসিন্দা মৃত মো. ইসমাইলের ছেলে হুমায়ুন কবির (৩২) ও নতুন পাড়ার মৃত কবির আহমদের ছেলে ছৈয়দ নুর (৪৬), সাশুল আলম (৫০) ও নুরুল হুদা (৪৬), হারগাজা প্রামের বাসিন্দা মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাবুল (৩০) ও নুরুল ইসলামের ছেলে কবির আহাম্মদ (৩৮)।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, হারগাজা গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বাবুল ও প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের মধ্যে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে শহিদুল ইসলাম বাবুলের নেতৃত্বে শিক্ষক রুহুল আমিনের উপর অতীতে বিভিন্ন সময় হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। সর্বশেষ শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শিক্ষক রুহুল আমিনের উপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনকে মারধরের পাশাপাশি স্কুলের নামে ব্যাংকে এফডিআরের জন্য রক্ষিত ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মোটর সাইকেলটি ভাংচুর করে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন বলেন, “জেলা প্রশাসক মহোদয় কর্তৃক ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতার বিষয়ে শুক্রবার সকালে স্কুলে যাই। কাজ শেষে মোটর সাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্তরা আমার মোটর সাইকেলের গতি রোধ করে হামলা চালায়। এতে আমি আহত হই।”
পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে কাছাকাছি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম প্রকাশ কালা সোনা বলেন, “প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন আমার জমির উপর দিয়ে তার ধানের জমিতে সেচের পানি পরিবহন করে আসছেন। এতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাধা দিলে প্রধান শিক্ষকের সাথে আমার তর্কবিতর্ক হয়।”
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের উপর হামলার ঘটনা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
Leave a Reply